আমাদের টেক্সটাইল শিক্ষা ব্যাবস্থা
শুরুতে ছবিতে দেখছেন কিছু বিদেশী কিছু আধুনিক টেক্সটাইল ইঞ্জিনিয়ার, যাদের টেক্সটাইল ছাড়াও ম্যাকানিকাল, ক্যামিকেল, মেশিনারি বিষয়ক পড়া পড়তে হয় । টেক্সটাইল পিউর ইঞ্জিনিয়ারিং নয় এই ম্যাকানিকাল, ইইলেক্ট্রিক্যাল, ক্যামিকেল এর মিশ্রিত ইঞ্জিনিয়ারিং। তাদের দেখে তাদের আর আমাদের মাঝে কিছু তুলনা মুলক লেখা লিখতে ইচ্ছে হলো যাতে করে আমরা আমাদের টেক্সটাইল শিক্ষা ব্যাবস্থার ক্রটি গুলি ধরতে পারি। সময়ের সাথে আমাদের টেক্সটাইল সেক্টর এগিয়ে গেলেও তার সাথে আমাদের শিক্ষা ব্যাবস্থার তেমন অগ্রগতি হয় নি।
সম্পুর্ন ব্যাক্তিগত অভিজ্ঞতা ও অভিমত, ভুলের জন্য আগেই ক্ষমা চেয়ে নিচ্ছি
আসুন আমাদের টেক্সটাইল ইঞ্জিনিয়ারদের অবস্থা জেনে নেইঃ
পৃথিবীর অন্য কনো দেশে বাংলাদের এর মতো এতো সহজে টেক্সটাইল ইঞ্জিনিয়ারিং পড়া হয় কিনা আমার জানা নেই কারন লেখা লেখা কারনে আমার সাথে দেশের বাইরের অনেক ফেকাল্টি আর টেক্সটাইল স্টুডেন্ট দের সাথে পরিচয়, তাদের IQ, Study Method, Project Works, Research Works, Syllebus, Quality, lab works ইত্যাদি বিচার কিরে আমার এই অভিমত ।
আমি আমাদের কিছু ত্রুটি তুলে ধরবো জে গুলি আমাদের সংশোধন করা অতিব জরুরী ।
কারনঃ
এখন ১৯৮০ সাল নয় জে ফেক্টরির তুলনায় টেক্সটাইল ইঞ্জিনিয়ার দের খুব অভাব যে ধরে ধরে ৩য় বর্ষ থেকে চাকুরী দেবে।
এখন ২০১৬ চলছে হাজারে হাজারে টেক্সটাইল ইঞ্জিনিয়ার বের হচ্ছে শয়ে শয়ে টেক্সটাইল ইন্সটিটিউট থেকে এখন ৩য় বর্ষ তো দুরে থাক ৪র্থ বর্ষ থেকেও জবে নেয় না, কোম্পানির নুনতম চাহিদা ১ বছরের অভিজ্ঞতা সম্পন্ন লোক । অনেক কোম্পানি যোগ্য লোক খুঁজতে নানা শর্ত বসিয়ে দিচ্ছে যেমন চাকুরী পেতে আপনাদের এই গুন গুলি থাকতেই হবে Communication Skill, CGPA, Smartness, Outlook, IQ , Presentation Etc
তার উপর আগে সিভি না দিয়ে আগে আসলে আগে পাবেন ভিত্তিতে নিয়োগ পেতো এখন ভিন্ন প্রক্রিয়া অনুসরণ করা হচ্ছে যেমন Cv Recive, Primary Filtering, Written, viba Then Presentation. এতে অনেক অযোগ্য লোক বাদ পড়ে যাচ্ছেন।
BD Jobs এ শুধু টেক্সটাইল জব এর জন্য একটি পোস্ট এর বিপরীতে ৪০০-৫০০ সিভি পড়ছে যা অন্যদের, অন্য সেক্টার এর তুলনায় বেশী।
টেক্সটাইল ইঞ্জিনিয়ারদের জন্য ভালো কনো প্রফেশনাল অর্গানাইজেশন নেই যারা তাদের বিদ্যমান সুযোগ সুবিধা গুলি সরকার বা ট্রেড বডি থেকে আদায় করে দিতে পারে। ফেক্টরি গুলিতে প্রচুর অনিয়ম দেখা যায় এক এক ফেক্টরির এক এক নিয়ম কানুন । ফলশ্রুতিতে এর সুবিধা গুলি নিচ্ছে বিদেশী প্রকৌশলীরা, তাদের পেছনে কোম্পানি গুলি লক্ষ লক্ষ টাকা ব্যায় করছে ।
বিদ্যমান সমস্যাগুলি ও সমাধনে করনীয় কিছু বিষয়
আমাদের স্টুডেন্টদের কিছু গাফিলতির চিত্র
১. দুই পাতার শিট মুখস্থ করে পরীক্ষা দেয়ার প্রবনতা, তার ভেতর আবার পরীক্ষায় কি কি আসবে তার ষর্ট সাজেশন খোজা। পড়া শর্ট করে ভালো ডাক্তার ইঞ্জিনিয়ার অন্তত হওয়া যায় না।
২. এসাইনমেন্ট গুলি কপি পেস্ট করা, অনেকে অমনি এসাইনমেন্ট করে যে গুলোর লিংক মুছতে ভুলে জায় ৯৯% স্টুডেন্ট তাদের নিজ এসাইনমেন্ট ভালো করে পড়তে দেখি নাই। এমনি দায় সারা ভাবে জমা দিয়ে দেয় । এই গুলি টেকনিক্যাল সাব্জেক্ট এতে অন্তত কাট_কপি_পেস্ট চলে না।
৩. ৯৯% ল্যাব রিপোর্ট আগের ব্যাচ এর ভাইদের কপি করা, অনেকে কি লিখছে তা ভালো করে জানে না । এমনি জমা দিয়ে দিচ্ছে। এই ছেলে গুলির বেসিক কম হবে না তো কি আমাদের কম হবে !!! এই ধরনের ছাত্র গুলি জবে গেলেও অন্যের উপর নির্ভর করে চলতে হয়।
৪. চার বছর টানা ইংলিশ পড়ে অনেকে ইংলিশ এর দক্ষতা প্রাইমারি স্কুল এর বাচ্চার কাছে হার মানে । কারো কাছে এটি মজা এর মতো লাগে।
৫. তাদের অনেকে প্রেজেন্টেশন অনেকের বিনোদন এর খোরাক জোগায়, কোনো ভুল সংশোধনন না করেই বারে বারে একই ভুল করে যাচ্ছে তারা । এই ভাবে প্রেজেন্টেশন হয় না।
৬. অনেকেরি জানার আগ্রহ খুব কম, তারা ঘাটা ঘাটির অভ্যাস খুবী কম, ৯৯% ছেলে মেয়ে বাবা মার কাছে ল্যাপটপ, কম্পিউটার পড়ার উছিলায় কিনলে ও তারা তা ব্যাবহার করে চিত্ত বিনোদন এর জন্য।
৭. সাম্প্রতিক কোন ঘটনা তারা জানতে চায় না। বা জানার প্রবনতা খুবি কম।
স্যারদের প্রতি
স্যারদের প্রতি বিনম্র সম্মান রেখে তাদের কিছু ত্রুটি তুলে ধরছি কারন কেওই ভুলের উর্ধে নয় :
১. অনেক টিচার স্টুডেন্ট দের তুলনায় নিজেরাই সুযোগ খুঁজতে থাকেন কি ভাবে অল্পতে সারা জায় কিনা । কি ভাবে ক্লাস গুলি দ্রুত শেষ করা যায়।
২. শিক্ষকতায় পেশাদারিত্ব মানায় না এতে শিক্ষায় মহত্ব নস্ট হয়। গুনে গুনে ক্লাস করিয়ে কি দক্ষ ইঞ্জিনিয়ার প্রস্তুত করা যায়।
৩. ছেলে মেয়ে দের নেগেটিভ কাউন্সিলিং করা যে ফেক্টরিতে গেলে সব শিখতে পারবে,
প্রশ্ন বাংলাদেশ এর কোন ফেক্টরি শিক্ষক বা কাউন্সিলর নিয়োগ দিয়েছন শিখানোর জন্য ???
৪. এয়ার জেট এর জুগে এখনো লুমের মাকু, সানা তে পড়ে আছেন। ওভেন গার্মেন্টস, ইয়ার্ন ডাইং এর জুগে এখনো নীট ডাইং নিয়ে পড়ে আছে।
৫. যুগের সাথে তাল আমরা মিলাতে পারিনি, আমাদের সিলেবাস এখনো ১৯৮০ সাল এর মতো বয়ে গেছে । এখনো এমন বিষয় বা টপিক পড়ানো হয় যার বাস্তব এপ্লিকেশন ফেক্টরিতে নেই। স্টুডেন্ট রা রেসিপি প্রসেস শেখে মান্দাতা আমলের ।
৬. মানুষ যেমন গুরু কে জিজ্ঞাস করে হাল চাষ করে না তেমনি ছাত্রদের মন মতো পড়ালে কখনো দক্ষ প্রৌকশলি পাবেন না ।
৭. আপনারা ফেক্টরির মতো করে তাদের তৈরি করুন । কারন তাদের অদক্ষতা জন্য আপনাদের দায়ী করা হয় প্রথমে । সাথে প্রতিস্টান কে তো অবশ্যই দায়ী করা হয়।
৮. ছাত্রদের আগ্রহী করে তুলুন, তাদের হতাশ করবেন না।
৯. টিচার দের জন্য ইন্টার্ন করা জরুরী তা নাহলে স্টুডেন্টদের প্রেক্টিকাল আইডিয়া আপনারা দিতে পারবেন না, যা টেক্সটাইল ইঞ্জিনিয়ারদের জন্য জরুরী।
কোন মন্তব্য নেই:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন